WBBSE ও WBBME এর অষ্টম শ্রেণির ভূগোল বিষয়ের মেঘ-বৃষ্টি অধ্যায় থেকে ১ নম্বরের ও দুই নম্বরের প্রশ্ন উত্তর দিয়ে দিয়ে দেওয়া হল।
1 নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর (1 Marks Questions)
প্রশ্ন: বায়ুতে জলীয় বাষ্পের পরিমাণকে কী বলে?
উত্তর: বায়ুতে জলীয় বাষ্পের পরিমাণকে আর্দ্রতা বলে।
প্রশ্ন: পরম আর্দ্রতার একক কী?
উত্তর: পরম আর্দ্রতার একক গ্রাম প্রতি ঘনমিটার (gm/m³)।
প্রশ্ন: আপেক্ষিক আর্দ্রতা কী এককে প্রকাশ করা হয়?
উত্তর: আপেক্ষিক আর্দ্রতা শতাংশ (%) এককে প্রকাশ করা হয়।
প্রশ্ন: কখন বায়ু সম্পৃক্ত হয়?
উত্তর: আপেক্ষিক আর্দ্রতা ১০০% হলে বায়ু সম্পৃক্ত হয়।
প্রশ্ন: শিশিরাঙ্ক কাকে বলে?
উত্তর: যে উষ্ণতায় বায়ু জলীয় বাষ্প দ্বারা সম্পৃক্ত হয়।
প্রশ্ন: জলীয় বাষ্প জলকণায় পরিণত হলে তাকে কী বলে?
উত্তর: জলীয় বাষ্প জলকণায় পরিণত হলে তাকে ঘনীভবন বলে।
প্রশ্ন: শিশির কী?
উত্তর: ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন বস্তুর ওপর জমা হওয়া জলকণা।
প্রশ্ন: কুয়াশা কী?
উত্তর: ভূপৃষ্ঠের কাছে ভাসমান অতি ক্ষুদ্র জলকণা।
প্রশ্ন: তুহিন কী?
উত্তর: শীতল বস্তুর ওপর জমা হওয়া বরফের কেলাস।
প্রশ্ন: আকাশে ভাসমান জলকণা বা বরফকণার সমষ্টিকে কী বলে?
উত্তর: আকাশে ভাসমান জলকণা বা বরফকণার সমষ্টিকে মেঘ বলে।
প্রশ্ন: পালকের মতো দেখতে মেঘ কোনটি?
উত্তর: পালকের মতো দেখতে মেঘ সিরাস।
প্রশ্ন: ‘ম্যাকেরেল আকাশ’ কোন মেঘ তৈরি করে?
উত্তর: ‘ম্যাকেরেল আকাশ’ সিরোকিউমুলাস মেঘ তৈরি করে।
প্রশ্ন: কোন মেঘে চন্দ্র ও সূর্যের চারপাশে বলয় দেখা যায়?
উত্তর: সিরোস্ট্রাটাস মেঘে চন্দ্র ও সূর্যের চারপাশে বলয় দেখা যায়।
প্রশ্ন: একটানা বৃষ্টির মেঘ কোনটি?
উত্তর: একটানা বৃষ্টির মেঘ নিম্বোস্ট্রাটাস।
প্রশ্ন: বজ্রগর্ভ মেঘের নাম কী?
উত্তর: বজ্রগর্ভ মেঘের নাম কিউমুলোনিম্বাস।
প্রশ্ন: মেঘ থেকে জল বা বরফ ভূপৃষ্ঠে পড়লে তাকে কী বলে?
উত্তর: মেঘ থেকে জল বা বরফ ভূপৃষ্ঠে পড়লে তাকে অধঃক্ষেপণ বলে।
প্রশ্ন: বৃষ্টির জলকণার ব্যাস কত?
উত্তর: বৃষ্টির জলকণার ব্যাস ০.৫ মিমি-র বেশি।
প্রশ্ন: তুষার কী?
উত্তর: মেঘ থেকে ঝরে পড়া বরফের কেলাস।
প্রশ্ন: শিলাবৃষ্টি কী?
উত্তর: ১-৫ সেমি বা তার বেশি ব্যাসের বরফের চাঁই।
প্রশ্ন: বৃষ্টিমাপক যন্ত্রের নাম কী?
উত্তর: বৃষ্টিমাপক যন্ত্রের নাম রেইন গজ।
প্রশ্ন: সমবর্ষণ রেখা কী?
উত্তর: মানচিত্রে সমান বৃষ্টিপাতযুক্ত স্থান সংযোগকারী রেখা।
প্রশ্ন: পরিচলন বৃষ্টি কোথায় বেশি হয়?
উত্তর: পরিচলন বৃষ্টি নিরক্ষীয় অঞ্চলে বেশি হয়।
প্রশ্ন: পর্বতের কোন ঢালে শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টি হয়?
উত্তর: পর্বতের প্রতিবাত ঢালে শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টি হয়।
প্রশ্ন: বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল কোথায় দেখা যায়?
উত্তর: বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল পর্বতের অনুবাত ঢালে দেখা যায়।
প্রশ্ন: ঘূর্ণবাতের ফলে কোন বৃষ্টি হয়?
উত্তর: ঘূর্ণবাতের ফলে ঘূর্ণবৃষ্টি বা সীমান্ত বৃষ্টি হয়।
প্রশ্ন: স্তূপাকার মেঘের উদাহরণ দাও।
উত্তর: স্তূপাকার মেঘের উদাহরণ কিউমুলাস।
প্রশ্ন: চাদরের মতো দেখতে মেঘ কোনটি?
উত্তর: চাদরের মতো দেখতে মেঘ স্ট্রাটাস।
প্রশ্ন: অল্টোস্ট্রাটাস মেঘ কোন উচ্চতায় দেখা যায়?
উত্তর: অল্টোস্ট্রাটাস মেঘ মাঝারি উচ্চতায় দেখা যায়।
প্রশ্ন: ঘনীভবনের জন্য অপরিহার্য উপাদান কী?
উত্তর: ঘনীভবনের জন্য অপরিহার্য উপাদান ঘনীভবন কেন্দ্র।
প্রশ্ন: স্লিট কী?
উত্তর: স্লিট হলো বরফের কুচি বা অর্ধগলিত তুষারকণা।
২ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর (2 Marks Questions)
প্রশ্ন: বায়ুমণ্ডলে জলীয় বাষ্পের দুটি প্রধান গুরুত্ব লেখো।
উত্তর: জলীয় বাষ্প মেঘ ও বৃষ্টি সৃষ্টি করে এবং পৃথিবীর উষ্ঞতা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এটি বায়ুমণ্ডলে লীনতাপ পরিবহনেও ভূমিকা রাখে।
প্রশ্ন: পরম ও আপেক্ষিক আর্দ্রতার মধ্যে প্রধান পার্থক্য কী?
উত্তর: পরম আর্দ্রতা হলো বায়ুতে জলীয় বাষ্পের প্রকৃত পরিমাণ (গ্রাম/ঘনমিটারে)। আপেক্ষিক আর্দ্রতা হলো বায়ুর জলীয় বাষ্প ধারণ ক্ষমতার শতাংশ (%) প্রকাশ।
প্রশ্ন: শিশিরাঙ্ক ও ঘনীভবনের মধ্যে সম্পর্ক কী?
উত্তর: বায়ু শীতল হতে হতে যে উষ্ণতায় জলীয় বাষ্প দ্বারা সম্পৃক্ত হয়, তা শিশিরাঙ্ক। এই শিশিরাঙ্কে পৌঁছালেই জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে জলকণায় পরিণত হয়।
প্রশ্ন: মেঘ কীভাবে সৃষ্টি হয়? সংক্ষেপে লেখো।
উত্তর: জলীয় বাষ্পপূর্ণ উষ্ণ বায়ু ওপরে উঠে প্রসারিত ও শীতল হয়। শিশিরাঙ্কে পৌঁছালে বায়ুর জলীয় বাষ্প ধূলিকণাকে আশ্রয় করে ঘনীভূত হয়ে মেঘ সৃষ্টি করে।
প্রশ্ন: সিরাস মেঘের দুটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।
উত্তর: সিরাস মেঘ বেশি উচ্চতায় (৬০০০-১২০০০ মিটার) অবস্থিত এবং এটি দেখতে সাদা পালকের বা অশ্বপুচ্ছের মতো। এই মেঘ মূলত সূক্ষ্ম তুষারকণা দ্বারা গঠিত।
প্রশ্ন: কিউমুলোনিম্বাস মেঘকে কেন বজ্রগর্ভ মেঘ বলা হয়?
উত্তর: কিউমুলোনিম্বাস মেঘ উল্লম্বভাবে বহুদূর বিস্তৃত হয় এবং এর মধ্যে জলকণা ও বরফকণার দ্রুত চলাচল ঘটে। এই কারণে এই মেঘ থেকে বজ্রপাতসহ প্রবল ঝড়বৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টি হয়।
প্রশ্ন: অধঃক্ষেপণের প্রধান রূপগুলি কী কী?
উত্তর: অধঃক্ষেপণের প্রধান রূপগুলি হলো বৃষ্টি, তুষারপাত, স্লিট (শেল সহ বৃষ্টি বা বরফকুচি) এবং শিলাবৃষ্টি। এগুলি জল বা বরফের বিভিন্ন অবস্থা।
প্রশ্ন: পরিচলন বৃষ্টিপাত প্রক্রিয়াটি সংক্ষেপে ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: ভূপৃষ্ঠের অত্যধিক উষ্ণতার ফলে বায়ু উত্তপ্ত ও হালকা হয়ে ওপরে ওঠে। এই ঊর্ধগামী বায়ু প্রসারিত ও শীতল হয়ে ঘনীভূত হয় এবং প্রধানত কিউমুলোনিম্বাস মেঘ সৃষ্টি করে বজ্রবিদ্যুৎসহ বৃষ্টিপাত ঘটায়।
প্রশ্ন: শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাতের জন্য কী ধরনের ভৌগোলিক অবস্থা প্রয়োজন?
উত্তর: শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাতের জন্য জলীয় বাষ্পপূর্ণ বায়ুর প্রবাহপথে উঁচু পর্বতের অবস্থান প্রয়োজন। পর্বত বাধা সৃষ্টি করে বায়ুকে ওপরে উঠতে বাধ্য করে।
প্রশ্ন: বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল বলতে কী বোঝো? এটি কেন সৃষ্টি হয়?
উত্তর: পর্বতের অনুবাত ঢালে যেখানে বৃষ্টিপাত খুব কম হয়, সেই অঞ্চলকে বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল বলে। জলীয় বাষ্পপূর্ণ বায়ু পর্বতের প্রতিবাত ঢালে বৃষ্টিপাত ঘটানোর পর অনুবাত ঢালে নামার সময় উষ্ণ ও শুষ্ক হয়ে যাওয়ায় এখানে বৃষ্টি হয় না।
প্রশ্ন: ঘূর্ণবাতজনিত বৃষ্টিপাত কীভাবে ঘটে?
উত্তর: ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রে নিম্নচাপ থাকায় চারপাশের আর্দ্র বায়ু কুণ্ডলী আকারে ওপরে ওঠে। এই ঊর্ধগামী বায়ু শীতল ও ঘনীভূত হয়ে বৃষ্টিপাত ঘটায়, যা ঘূর্ণবৃষ্টি নামে পরিচিত।
প্রশ্ন: কুয়াশা ও মেঘের মধ্যে দুটি পার্থক্য লেখো।
উত্তর: কুয়াশা ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন বায়ুমণ্ডলে জলকণার ঘনীভবন, যা দৃশ্যমানতা কমায়। মেঘ অনেক উঁচুতে আকাশে জলকণা বা তুষারকণার সমষ্টি, যা অধঃক্ষেপণ ঘটায়।
প্রশ্ন: শিশির ও তুহিনের মধ্যে মূল পার্থক্য কী?
উত্তর: মেঘমুক্ত রাতে ভূপৃষ্ঠের কোনো বস্তু শীতল হলে তার ওপর জলীয় বাষ্প জলকণারূপে জমলে তা শিশির। উষ্ণতা হিমাঙ্কের নীচে নেমে গেলে জলকণার পরিবর্তে বরফকণা জমলে তা তুহিন।
প্রশ্ন: অল্টোস্ট্রাটাস মেঘের দুটি শনাক্তকরণ বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তর: অল্টোস্ট্রাটাস মেঘ মাঝারি উচ্চতায় ধূসর বা নীলচে রঙের চাদরের মতো দেখতে হয়। এর মধ্য দিয়ে সূর্য বা চাঁদকে অনেক সময় অস্পষ্ট বা আংশিকভাবে দেখা যায়।
প্রশ্ন: নিম্বোস্ট্রাটাস ও কিউমুলোনিম্বাস মেঘের মধ্যে কোনটি থেকে একটানা বৃষ্টি হয় এবং কোনটি থেকে ঝড়বৃষ্টি হয়?
উত্তর: নিম্বোস্ট্রাটাস মেঘ থেকে সাধারণত একটানা, মাঝারি বৃষ্টিপাত হয়। কিউমুলোনিম্বাস মেঘ থেকে অল্প সময়ের জন্য বজ্রপাতসহ প্রবল ঝড়বৃষ্টি বা শিলাবৃষ্টি হয়।
প্রশ্ন: বৃষ্টিপাত পরিমাপের একক ও যন্ত্রের নাম লেখো।
উত্তর: বৃষ্টিপাত পরিমাপের একক হলো মিলিমিটার বা সেন্টিমিটার। এটি পরিমাপ করা হয় বৃষ্টিমাপক যন্ত্র বা রেইন গজের সাহায্যে।
প্রশ্ন: “সম্পৃক্ত বায়ু” এবং “শিশিরাঙ্ক” – এই দুটি ধারণার মধ্যে যোগসূত্র কী?
উত্তর: বায়ু যখন জলীয় বাষ্প দ্বারা সম্পৃক্ত হয়, তখন তার আপেক্ষিক আর্দ্রতা ১০০% হয়। যে উষ্ণতায় বায়ু এই সম্পৃক্ত অবস্থায় পৌঁছায়, তাকেই শিশিরাঙ্ক বলে।
প্রশ্ন: “ঘনীভবন কেন্দ্র” বলতে কী বোঝায়? এর একটি উদাহরণ দাও।
উত্তর: বায়ুমণ্ডলে ভাসমান অতি ক্ষুদ্র কণা (যেমন ধূলিকণা, লবণ কণা) যার ওপর জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে জলকণায় পরিণত হয়, তাকে ঘনীভবন কেন্দ্র বলে। উদাহরণস্বরূপ, সমুদ্রের লবণ কণা।
প্রশ্ন: সীমান্ত বৃষ্টি কী? এটি কোন পরিস্থিতিতে ঘটে?
উত্তর: উষ্ণ ও আর্দ্র বায়ু এবং শীতল ও শুষ্ক বায়ুরাশি মুখোমুখি হলে উষ্ণ বায়ু হালকা হওয়ায় শীতল বায়ুর ওপর ধীরে ধীরে আরোহণ করে। এই সংযোগস্থলে (সীমান্তে) যে বৃষ্টিপাত হয়, তাকে সীমান্ত বৃষ্টি বলে।
প্রশ্ন: জলচক্রের দুটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ উল্লেখ করো যা মেঘ ও বৃষ্টির সাথে সম্পর্কিত।
উত্তর: জলচক্রের দুটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ যা মেঘ ও বৃষ্টির সাথে সম্পর্কিত হলো বাষ্পীভবন (জলীয় বাষ্প সৃষ্টি) এবং অধঃক্ষেপণ (বৃষ্টিরূপে জলের ভূপৃষ্ঠে ফিরে আসা)। ঘনীভবনও (মেঘ সৃষ্টি) একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।